তমলুকে হেরে অভিমানী তৃনমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য্য

Debangshu Bhattacharya - দেবাংশু ভট্টাচার্য্য

সদ্য সমাপ্ত হয়েছে অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচন। রাজ্য জুড়ে বিপুল সংখ্যক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ভালো ফল করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে পূর্ব মেদিনীপুরের দুটি আসন‌ই হাতছাড়া হয়েছে তাঁদের। এর মধ্যে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী ছিলেন দলের যুব নেতা পরিচিত মুখ দেবাংশু ভট্টাচার্য্য। অপরদিকে বিজেপির প্রার্থী ছিল প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর‌ই কাছে পরাজিত হতে হয় দেবাংশু ভট্টাচার্য্য কে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট পরবর্তী জয়ী সাংসদদের নিয়ে শনিবার বৈঠক করেন কালিঘাটে। জানা গেছে সেখানেও উঠেছিল তমলুকের দেবাংশু ভট্টাচার্য্যের হারের প্রসঙ্গ। এরপর‌ই আজ রবিবার স্যোসাল মিডিয়ায় নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে অভিমানের সুরে পোস্ট করতে দেখা যায় দেবাংশুকে।

WhatsApp Channel Join Now
Telegram Channel Join Now

তাঁর দাবি নিজের ‘১০১ শতাংশ’ দেওয়ার পরেও টাকার কাছে হেরে গিয়েছেন। তিনি লিখেছেন “নিজেদের সবটা দেওয়ার পরেও অর্থের কাছে হেরে গিয়েছি। এত কোটি কোটি টাকার বিরুদ্ধে আমাদের স্বল্প ক্ষমতার লড়াই ব্যর্থ হয়েছে। গোটা জেলায় নেতা-কর্মী নয়, ভোট করিয়েছে কেবল টাকা। সাথে সাথে ছিল নন্দীগ্রাম ও ময়নার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিস্তৃত সন্ত্রাস।”
“সকাল ৬ টায় ঘুম থেকে উঠে টয়লেট সেরে, স্নান করে, এক বাটি ছাতুর সরবত খেয়ে রোজ বেরিয়ে পড়তাম সকাল ৮–টার মধ্যে। প্রবল রৌদ্রে দুপুর ১ টা পর্যন্ত প্রচার চলত। তারপর ঠিকানায় ফিরে একটু গা ধুয়ে, দুপুরের খাওয়া সেরে পুনরায় ৩ টে নাগাদ রওনা দিতাম। চলত রাত্রি ৯-টা পর্যন্ত.. কখনও কখনও সেটা সাড়ে দশটাও বাজত। রাতে নিমতৌড়ির বাড়িতে ফিরে খাবার খেয়ে শুরু হত বিভিন্ন নেতা, কর্মীদের সাথে বাড়ির অফিসে অভ্যন্তরীণ মিটিং , কখনও কখনও সেসব মিটিং চলেছে রাত্রি ২-টো পর্যন্তও..। মিটিং শেষে ঘুমিয়ে আবার পরের দিন সকালে ৬ টায় ওঠা..। তমলুকের দলীয় কর্মীরা, যারা সেই বাড়িতে প্রায়শই আসতেন তারা সকলেই এই রুটিন জানেন। পরিশ্রমে নিজের ১০১% দিয়েছি। যা করতে পারি তার বেশি করেছি। আমার টিম, আই প্যাকের কয়েকজন এবং পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় উন্মাদের মত পরিশ্রম করেছে। সাথে প্রাণপাত করে দিয়েছেন বুথ স্তরের দলীয় কর্মীরা..

তৃণমূল কংগ্রেসের তমলুক লোকসভার পরাজিত প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য ফেসবুকে লিখেছেন…

“নিজেদের সবটা দেওয়ার পরেও অর্থের কাছে হেরে গিয়েছি। এত কোটি কোটি টাকার বিরুদ্ধে আমাদের স্বল্প ক্ষমতার লড়াই ব্যর্থ হয়েছে। গোটা জেলায় নেতা-কর্মী নয়, ভোট করিয়েছে কেবল টাকা। সাথে সাথে ছিল নন্দীগ্রাম ও ময়নার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিস্তৃত সন্ত্রাস; নির্বাচনের দিন তিনেক আগে থেকে বিরুলিয়া, বয়াল, ভেকুটিয়া, হরিপুর, গোকুলনগরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট দিতে না বেরোনোর হুমকি তথা ফতোয়া এবং সোনাচূড়া অঞ্চল জুড়ে ভোটের দিন দেদার ছাপ্পা। ময়নার বাকচা অঞ্চল এতটাই মুক্তাঞ্চল, তৃণমূল নাম উচ্চারিত হলেও মারধর এমনকি প্রাণহানিও সেখানে নতুন নয়। দলের ঝান্ডা বাঁধার লোক অন্ধি সেখানে নেই। তার উপর নির্বাচনের দিন দুয়েক আগেই সেই খুন; যাকে কেন্দ্রে করে গোটা নন্দীগ্রাম হয়ে উঠেছিল দুর্বৃত্তদের অবাধ বিচরণক্ষেত্র। সেই পরিস্থিতে সবটা এতটা একপেশে হয়ে গিয়েছিল, এক সময়ে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছিল এই নির্বাচন এখন লড়া, না লড়া সমান ব্যাপার। তবুও আমরা হাল ছাড়িনি!

পরিস্থিতির সুযোগে আমার বিপরীতের প্রার্থী আধা বেলা প্রচার না করেও জিতে গিয়েছেন.. আর আমি পাগলের মত বুথ বুথ ঘুরেও জিততে পারিনি।

অনেক মানুষ চেনা, অনেক রকমারি অভিজ্ঞতাকে কেন্দ্র করে শেষ আড়াই মাস ভিমড়ি খেয়েছি প্রচুর, প্রকাশ্যে সবটা লিখতে কিংবা বলতে চাই না।

মার্চে ওজন ছিল ৮৩ কিলো। যা আজ কমে ৭৭.. সৌজন্যে শেষ আড়াই মাস। এই ৬ কিলো ওজনের বিনিময়ে ৬ লক্ষ ৮৭ হাজার মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি, আশীর্বাদ পেয়েছি। সেটাই আমার কাছে এই নির্বাচনের নির্যাস..

আগামী দিনে এই রাজনৈতিক নদী পথ আমায় কোন মোহনায় নিয়ে গিয়ে ফেলবে জানিনা.. শুধু এটুকু জানি, আমার নৌকো খোয়া গেছে, কেবল নিজেকে ভাসিয়ে, বাঁচিয়ে রেখেছি এই অগাধ জলরাশির পৃষ্ঠ দেশে..।।

আমি কৃতজ্ঞ নেত্রী আর দাদার কাছে। এত অল্প বয়সে তারা আমায় এই সুযোগ দিয়েছেন..”

https://www.facebook.com/share/p/SP1gQoAme3xFBuuf/?mibextid=xfxF2i

RR DIGITAL TV তে সবার আগে নিউজ পেতে Follow করুন…

ফেসবুক পেজ | ইনস্টাগ্রাম | এক্স হ্যান্ডেল (টুইটার) | টেলিগ্রাম চ্যানেল | হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল

এবং সাবস্ক্রাইব করুন – ইউটিউব চ্যানেলে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *